মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :: আসন্ন ঈদুল আজহার পর কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসা বাণিজ্য কঠিন শড়ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হবে। আবাসিক হোটেল, রেষ্টুরেন্ট সহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট যে সকল প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত কোভিড-১৯ সংক্রামন প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকবে এবং স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে মেনে চলবে শুধুমাত্র সেসব প্রতিষ্ঠানকে খোলার অনুমতি দেওয়া হবে।
আজ সোমবার ২০ জুলাই বেলা ১ টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে ‘আমরা কক্সবাজার বাসী’ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন এ আশ্বাস দেন। সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া আমরা কক্সবাজারবাসী’র সমন্বয়কারী সাংবাদিক শেখ মহসিন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারবাসীর বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন আমরা কক্সবাজারবাসীর সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন, গণমাধ্যম কর্মী শেখ মহসিন, কমরেড কলিম উল্লাহ, এডভোকেট সাকী এ কাউসার, এডভোকেট আবদুর রহিম, মোহনা টিভি’র কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক আমানুল হক বাবুল, ছফিনা আজিম, কামাল উদ্দিন রহমান পিয়ারু, উজ্জ্বল সেন, অধ্যাপক উজ্জ্বল প্রমুখ। জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে ধৈর্য সহকারে বক্তাদের কাছ থেকে জেলাবাসীর প্রাণের দাবি দাওয়ার কথাগুলো শুনেন।
আমরা কক্সবাজারবাসীর তুলে ধরা দাবি দাওয়ার মধ্যে ছিলো-জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি হকুম দখল শাখায় দুর্নীতিতে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথাপোযুক্ত শাস্তি প্রদান, ৫১ একর ডিসি পাহাড় ও কলাতলী সড়ক ও জনপথের পাহাড় কাটা ও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতের ঝুপড়ি উচ্ছেদ করে তাদেরকে পূণর্নবাসন করা,
কক্সবাজার শহরের জরাজীর্ণ সকল রাস্তা ও অলিগলি আরসিসি ঢালাই করে উন্নয়ন করা, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে সদ্য নিয়োগ দেওয়া দুর্নীতির মামলা খাওয়া ডা. জাকির হোসেন খান এর নিয়োগ বাতিল করা, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের জনৈক খুরুস্কুলের বাসিন্দা চিকিৎসক ও তার স্ত্রী শহরের বেশ ক’টি প্রাইভেট হাসপাতালের সাথে জড়িত থাকায় সদর হাসপাতালে নিয়মিত সময় দিতে পারেননা এবং সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে কৌশলে ঠেলে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
উক্ত চিকিৎসককে জেলা সদর হাসপাতাল থেকে দ্রুত বদলি করা, রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোতে কর্মরত আইএনজিও এবং এনজিও-তে স্থানীয়দের হিস্যা মতে নিয়োগ দেওয়া, জেলা সদরে সংস্কৃতি চর্চার প্রাণ কেন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি ও ইনষ্ঠিটিউট সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া, কক্সবাজার বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি পুণর্গঠন করা, জেলার হাসাপাতাল গুলোতে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো উন্নত ও আধুনিকায়ন করা, জেলায় তামাক চাষ বন্ধ করা ইত্যাদি।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন এসময় বলেন, আমরা কক্সবাজারবাসীর উত্থাপিত প্রায় সকল দাবি দাওয়া যৌক্তিক ও বাস্তবায়ন করা সকল নাগরিকদের স্বার্থে প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। তাই এসব দাবি দাওয়া পূরণে তিনি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন এবং সংশ্লিষ্ট স্ব স্ব বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানকে এসব বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্রুত তাগদা দেবেন বলে জানান।
বক্তারা, কক্সবাজার ডিসি কলেজ প্রতিষ্ঠা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য ‘অরুণোদয়’ স্কুল প্রতিষ্ঠা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে ‘শহীদ ফরহাদ-সুভাষ তোরণ’ নির্মাণ করায় জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনকে ধন্যবাদ জানান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা মনসুরুল হক, কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, আমরা কক্সবাজারবাসী’র ডেইজি ফাতেমা আনকিছ, এডভোকেট তাহেরুল ইসলাম, মাস্টার মুজিবুল হক, মা থিন থিন রাখাইন সহ আমরা কক্সবাজারবাসী ও কক্সবাজার সোসাইটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক মহসিন শেখ।
পাঠকের মতামত: